‘আমার মৃত্যুর সংবাদের মাধ্যমেও যদি এদের বিচার হয়, তাহলে তাই হোক। নুরদের গ্রেফতারের খবর না শুনে উঠব না।‘
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সহযোগীদের গ্রেফতাদের দাবিতে অনশনের তৃতীয় দিনেও বাদী জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে তিনি কোনোভাবেই খাবার খাবেন না।
গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেন নুরদের বিরুদ্ধে তিন মামলার বাদী।
অনশনে সংহতি জানাতে আসা একাধিক তরুণী তাকে শরীর খারাপ হবে বলে খাবার খাওয়ার অনুরোধ করেন। সব অনুরোধ উপেক্ষা করেন তিনি। পরে দুর্বল হয়ে যাওয়া তরুণীকে দেয়া হয় স্যালাইন।
তরুণী বলেন, ‘নুরদের গ্রেফতার হওয়ার খবর যখন জানব, তখনই আমি অনশন ভাঙব। এর আগ পর্যন্ত এখানেই পড়ে থাকব।’
- আরও পড়ুন: ‘তবে কি আমার ভিডিও ভাইরাল হতে হবে?’
সংহতি জানানো একজন নারী জানান, জোরাজুরি করেও ওই তরুণীকে কিচ্ছু খাওয়ানো যায়নি। সকাল থেকে আর কথায় বলতে পারছিলেন না। কোলে ঢলে পড়েছেন। পরে স্যালাইন দেয়া হয় তাকে।
শনিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে অনশনস্থলে গিয়ে বাদীকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন একজন নারী।
নুরুল হক নুরদের গ্রেফতারের দাবিতে অনশনের তৃতীয় দিনে স্যালাইন দেয়া হয়েছে তরুণীকে।
বাদী বলেন, ‘শাহবাগে ধর্ষণের বিরুদ্ধে মহাসমাবেশ হয়েছে কাল, প্রেসক্লাবে বিক্ষোভ হয়েছে। অথচ আমি যে এখানে ন্যায়বিচারের দাবিতে পড়ে আছি, আমার খোঁজ কে নিচ্ছেন?’
‘তারা নোয়াখালীর বিচার চাইতেছে। অথচ আমি তাদের ঘরের কোণায় পড়ে আছি, আমাকে তারা দৃষ্টিগোচর করতেছে না।‘
‘এখন পর্যন্ত কারও থেকে আমি সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস পাইনি যে বিচার পাব। এর শেষ না দেখে আমি উঠব না। দরকার পড়লে আমার লাশ যাবে এখান থেকে।‘
- আরও পড়ুন: বোনটার জন্য তো নামতে দেখলাম না: ছাত্রলীগ
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ থানায় সাধারণ ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন বাদী। অভিযোগ করা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
ভিপি নুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মীমাংসার আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেননি। পরে চুপ হয়ে যেতে বলেন। কথা না শুনলে অনলাইনে অপপ্রচার চালানোর হুমকি দেন।
পরে ছয় আসামির বিরুদ্ধে ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর আরও দুটি মামলা করেন বাদী। এতে অনলাইনে অপপ্রচারের অভিযোগ আনা হয়।
গত ৪ অক্টোবর গ্রেফতারের আবেদন নিয়ে আদালতে যান বাদী। বিচারক বলেন, পুলিশ চাইলে আসামিদের গ্রেফতার করতে পারে। তবে কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এর মধ্যে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের গঠন করা তদন্ত কমিটির দাবি, ধর্ষণের প্রমাণ নেই
আরও পড়ুন: ‘ছবি-ভিডিও নেই’, তাই ‘ধর্ষণ হয়নি’
কমিটির প্রধান বিন ইয়ামিন মোল্লা এই সিদ্ধান্তে আসার যুক্তি হিসেবে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো ছবি, ভিডিও এমন কিছু আমরা খুঁজে পাইনি, বা অভিযোগকারী আমাদের দিতে পারেনি। তাছাড়া ধর্ষণ একটি সেনসিটিভ কেস। তাই কারও মৌখিক অভিযোগে আমরা কাউকে অপরাধী বলতে পারি না।’
পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ তরুণী বলেন, ‘পুলিশ পারে না এমন কোনো কাজ নেই। তাহলে মামুন, সোহাগ কি দেশ ছেড়েছে? তাদের ধরতে পারছে না কেন?’